Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
মিথ্যা অভিযোগের সাপেক্ষে তদন্তে এসে জেলা প্রশাসক (মাগুরা) মহোদয় কর্তৃক সত্য উৎঘাটন
ছবি
ডাউনলোড

জেলা প্রশাসক (মাগুরা) মহোদয়ের ফেসবুক থেকে নেওয়া:

https://www.facebook.com/profile.php?id=100006658936205&hc_ref=ARTXiSabbR1KBdfW0_ififpveq39wieDzhQ84no7eaid5ZoGkL9kPww9M3vHTdcfF8E

আলোকিত মাহমুদা খানম : একজন উদ্ভাবক সাব রেজিস্ট্রার

তাঁর প্রতি অভিযোগ ছিলো অনেক। অধিকাংশই গুরূতর।

[[ “গত ইংরেজী ২৬ নভেম্বর, ২০১৭ তারিখে মহম্মদপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে নতুন সাব রেজিস্ট্রার মাহমুদা খানম যোগদানের পর হতে এ অফিসের কর্মকর্তাগণ অত্র অফিসের ঘুষ দুর্নীতি আকড়ায় পরিণত করেছেন। কবলা দলিলের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক তাকে ১% ঘুষ দিতে হবে। কোন প্রকার কম দিলে ঔ লোকের দলিল অফিসের টিসি মহরার আবুল খায়ের টেনে ফেলে দেন এবং রেজিস্ট্রীর জন্য এজলাসে উপস্থাপনা করেন না।

দানপত্র দলিলের ক্ষেত্রে শতক প্রতি ৩০০/- টাকা হারে অগ্রীম ঘুষ দিতে হয় অথবা দলিল মূলে নামপত্তন ছাড়া দানপত্র করতে হলে দলিল প্রতি ৫০০০/- টাকা অগ্রীম না দিলে তিনি দলিল চেক করেন না বা এজলাসে দলিল তোলেন না। কোন দানপত্র দলিলের ক্ষেত্রে বা হেবা দলিলের থেকে ৫০০০/- টাকা কম দিলে তিনি টেবিল থেকে ছুড়ে ফেলে দেন।” ]]

দেশের সাবরেজিস্ট্রি অফিসে লোকজন আসে জমি কেনা-বেচা করার জন্য । এ অফিসটা অনেক রাজস্ব আয় করে সরকারের জন্য।
সাবরেজিস্ট্রি অফিসে হয়রানী, কাজে দেরি হওয়া, কখনো বা দুর্নীতি। এসব খুব অস্বাভাবিক ব্যাপারে নয়।

শত বছরের পুরনো এই রেজিস্ট্রেশন আইন সম্পর্কে অধিকাংশ লোকের ধারণা অস্পষ্ট। আর এই সুযোগে কিছু লোক সুযোগ নেয় । লোকজনকে হয়রানী করে । তাদের না-জানাকে পুঁজি করে নিজেরা লাভবান হয় ।

নিয়মিত অভিযোগ পেয়ে মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার সাবরেজিস্ট্রি অফিসে হঠাৎ করেই একদিন যাওয়া হলো। গিয়ে দেখা গেল, একজন নিঃসঙ্গ নাবিকের স্রোতের বিপরীতে সমুদ্র পাড়ি দেয়ার প্রচেষ্টা।

যারা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে সেবা নিতে এসেছেন, তাদের সাথে কথা হলো। তারা বেশ সন্তষ্ট। কোন অভিযোগ নেই। সাব রেজিস্ট্রার আপা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। নির্ধারিত সময়েই দলিল সম্পাদন করা হচ্ছে কোন রকম হয়রানী ছাড়াই।

যাদের পাওয়া গেলো, জানালেন বর্তমানে সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়া বাড়তি অর্থ দিতে হয় না।

যার বিরুদ্ধে এতো এতো অভিযোগ, জিজ্ঞাসাবাদে জানালেন, বেশ কিছু উদ্ভাবনী উদ্যোগ নিয়েছেন এখানে আসার পর।
এখন নকল দ্রুত দেয়া হয়। তিনি অসুস্থ ও প্রবীন সেবাগ্রহীতাদের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করেছেন।

তিনি দুপুর ৩টা পর্যন্ত দলিল উপস্থাপন করার সময় বেঁধে দিয়েছেন। মূল দলিল ফেরৎ নেয়ার প্রক্রিয়া দ্রুততর ও সহজ করেছেন।

লিফলেট দিচ্ছেন সেবা গ্রহীতাদের। বসার ব্যবস্থা করেছেন যারা সেবা নিতে আসেন তাদের জন্য। এমনকি টিপ সই দেয়ার পর যেন হাত মুছতে পারে সে ব্যবস্থাও করেছেন।

লোকজন যাতে জমি রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কিত আইন সহজে বুঝতে পারে সে ব্যাপারে লিফলেট বিতরণ করেছেন।
বিকেল ৫ টার মধ্যে অফিসের কাজ শেষ হয়ে যায়।

যারা এসেছেন সেবা নিতে, তাদেরকে আলাদা আলাদা করে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো, তারা সন্তষ্ট। কোন অভিযোগ নেই সাব রেগিস্তেরার আপার প্রতি। বরং জানালেন তাদের সন্তষ্টির কথা। বিশেষ করে বয়স্করা পাঁচটার মধ্যে কাজ হওয়ায়, প্রয়োজনীয় কাগজ যাচাই করতে পারে ভূমি অফিস থেকে। সরকারের পাওনা যথাযথভাবে হচ্ছে।

অথচ আগে উদ্দেশ্যমূলকভাবে দুপুরের পরে রেজিস্ট্রেশনের কাজ শেষ করতে সন্ধ্যা হয়ে যেতো, কাগজের সত্যতা যাচাই করা যেত না।

এটা ঠিক তিনি কিছু অন্যায় করছেন !

আগে দুপুরে দলিল উপস্থাপন করায়, সন্ধ্যার পর যাচাই করা যেতনা। আগে দলিল ফেরতে সময় লাগলেও এখন তা কম সময়ে হচ্ছে। অফিস আঙিনা এখন আগের তুলনায় পরিস্কার। একটি ডাস্টবিন স্থাপন করেছেন। নকল দ্রুত সরবরাহ করা হচ্ছে।
আগে প্রবীনদের জন্য বিশেষ সুবিধা না থাকলেও এখন আছে। পাওয়ার অব এটর্নি সহজে পাচ্ছে।

আগে লোকজন টিপসই দিয়ে দেয়ালে হাত মুছতো। তিনি একটি কাপড় রাখার ব্যবস্থা করেছেন, যাতে তাতে হাত মোছা যায়।

আগে অফিসের আশেপাশে টয়লেট ছিলো না, তিনি এসে এটা চালু করেছেন।


লোকজন জানালো আগে অফিসের পাশে ময়লা পড়ে থাকলেও এখন ডাস্টবিন রাখার ফলে ময়লা সেখানেই ফেলা হচ্ছে।

এখন তিনি ১০ দিনের মধ্যে দলিল ফেরৎ দেন। অনেকে জমির দাম কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করে। এমন কিছু নজরে পড়লে তিনি সাথে সাথে সংশোধনের ব্যবস্থা করেন।

এছাড়া অহেতুক পাওয়ার অব এটর্নি ও দানপত্র দেয়া নিরুৎসাহিত করছেন। জানা গেল এতে রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা বন্ধ হচ্ছে। পারিবারিক কলহও নাকি এতে কমে যায়।

তাঁর যুক্তিতে দেখা গেল আত্মবিশ্বাস ।

বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় উৎসবের দিনগুলোতে সহকর্মীদের নিয়ে সবার সাথে থাকেন।

তাঁর ভাষায়, সংবিধান বলে, আমরা জনগনের সেবক। তাদের জন্য নির্ভুল সেবা দেয়াই তাঁর লক্ষ্য ।

তাঁর অফিসের পুরনো অবকাঠামো খুব সুন্দর বলা যাবে না। বরং চারিদিকে এক ধরণের বিষণ্ণতার প্রলেপ।
কিন্তু এই ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে অফিসে তিনি আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন। এখানেই তিনি অন্যদের থেকে বাতিক্রম।

এতো কিছু যিনি করছেন, নিজের টাকা দিয়ে প্রবীণদের জন্য হুইল চেয়ার কিনেছেন, এতো উদ্ভাবনী উদ্যোগ শুরু করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধেই এতো অভিযোগ!
তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। এগিয়ে যাচ্ছেন।

মাহমুদা কে অভিনন্দন।

আপনি একা নন। আপনার সাথে আমরা আছি। Changemaker শব্দটা আপনার সাথে মানায়।

আপনার চমৎকার উদ্ভাবনগুলো ছড়িয়ে পড়ুক সারা দেশে।